Download our app Go Here Download Now!

বদ নজরের লক্ষণ এবং তা থেকে বাঁচার উপায়

https://islamicjolsa.blogspot.com


ইবনে কাসির রহ. বলেন- বদনজর এর প্রতিক্রিয়া সত্য,। (তাফসিরে কাসির, ৪/৪১০)

ইবনে হাজার রহ. বদনজরের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, "বদনজর বলতে বুঝায়, কোন উত্তম বস্তুকে খারাপ কোনো লোক হিংসার নজরে দেখে, যার কারণে উক্ত বস্তুর ক্ষতিসাধন হয়!" (ফাতহুল বারি, ১০/২০০)

জিনের বদনজর মানুষকে লাগতে পারে, উদাহরণ হিসেবে দুটি হাদিস খেয়াল করুন

১. আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগে দু'আ করার সময় প্রথমে জিনের বদনজর থেকে পানাহ চাইতে বলতেন, তারপর মানুষের নজর থেকে পানাহ চাইতে বলেছেন। পরে সুরা নাস ফালাক নাযিল হওয়ার পর এই দুটি দিয়ে দুয়া করতেন। (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)

২. উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. উনার ঘরে এক বালিকাকে দেখলেন যার চেহারায় বদনজরের আলামত ছিলো। রাসূল সা. বললেন- এর জন্য রুকয়া করো, একে জিনের বদনজর লেগেছে। (বুখারি, মুসলিম)

বদ নজর লাগার কিছু আলামত-

১। শরীরে জ্বর থাকা, কিন্তু থার্মোমিটারে ধরা না পড়া।

২। কোনো কারণ ছাড়াই কান্না আসা..

৩। প্রায়সময় কাজে মন না বসা, নামায যিকর ক্লাসে মন না বসা।

৪। প্রায়শই শরীর দুর্বল থাকা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি লাগা।

৫। চেহারা ধুসর/হলুদ হয়ে যাওয়া।

৬। বুক ধড়পড় করা, দমবন্ধ অস্বস্তি লাগা। 

৭। অহেতুক মেজাজ বিগড়ে থাকা।

৮। আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই ভালো না লাগা।

৯। মেয়েদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চুল পড়া। চেহরার মাঝে পরিবর্তন চলে আসা।

১০। পেটে বারবার সমস্যা হওয়া। 

১১। বিভিন্ন সব অসুখ লেগে থাকা যা দীর্ঘদিন চিকিৎসাতেও ভালো হয় না।

১২।  হাত-পায়ে মাঝেমধ্যেই ব্যাথা করা, পুরো শরীরে ব্যাথা দৌড়ে বেড়ানো। 

১৩। ব্যবসায় ঝামেলা লেগে থাকা।

১৪। আপনি যে কাজে অভিজ্ঞ সেটা করতে গেলেই অসুস্থ হয়ে যাওয়া।

১৫|  কিটমিটে মেজাজ থাকা। (ইত্যাদি)

এবার বদ নজরের চিকিৎসা জেনে নিন..

প্রথম পদ্ধতিঃ রোগীর মাথায় হাত রেখে এই দুয়া গুলো পড়বে, পড়া শেষে রোগীর গায়ে ফুঁ দিবে.. এরকম কয়েকবার করবে।

১। 

بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ

২। 

بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ

৩। 

اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَاسَ، اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي، لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

প্রথম দুটি দু'আ মুসলিম শরিফের দুই হাদিস থেকে নেয়া, রাসূল সা. অসুস্থ হলে জিবরীল আ. এসব দুয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করতেন। তৃতীয় দু'আটি বুখারি মুসলিম উভয়টাতে আছে, দুয়ার শব্দগুলো বুখারি থেকে নেয়া। রাসূল সা. এটা পড়ে অসুস্থদের ফুঁ দিতেন। রাসুল সা. অসুস্থ হলে আয়েশা রা. এটা পড়েছেন।

২য় পদ্ধতিঃ ব্যাথা থাকলে সেই যায়গায় হাত রেখে, অথবা মাথায় হাত রেখে ৩ বার করে সুরা ফাতিহা, ইখলাস, ফালাক, নাস পড়বেন এরপর সেখানে ফুঁ দিবেন। সমস্যা বেশি হলে এভাবে রুকয়া করা শেষে, এই সুরাগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে গোসল করবেন। সমস্যা ভালো হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন করা উচিত। ব্যাথা থাকলে এসব সুরা পড়ে তেলে ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন মালিশ করতে পারেন। 

৩য় পদ্ধতিঃ যদি কোনো গাছ, গৃহপালিত পশু, দোকান অথবা বাড়িতে নজর লাগে তাহলে উপরের সুরা এবং তার ওপরের দু'আগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিবেন, এরপর ওই পানিটা (গাছে/ঘরে/পশুর গায়ে) ছিটিয়ে দিবেন।

৪র্থ:- 

1.  আয়াতগুলো সমস্যা ভালো না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন তিলাওয়াত করবেন অথবা শুনবেন, সরাসরি শোনা সম্ভব না হলে অডিও রেকর্ড শুনবেন। এভাবে প্রতিদিন কমপক্ষে ১/২বার শুনুন, আরও বেশি শুনলে বেশি ফায়দা। 

2. আর সম্ভব হলে প্রতিদিন, নইলে একদিন পরপর পড়া পানি দিয়ে গোসল করবেন। একদম সুস্থ হওয়া পর্যন্ত।

গোসলের নিয়ম পদ্ধতি হচ্ছে-

"একটা বালতিতে পানি নিবেন, তারপর ওই পানিতে দুইহাত ডুবিয়ে নিচের জিনিশগুলো পড়বেন (যদি টয়লেট আর গোসলখানা একসাথে হয় তখন এসব অবশ্যই বাহিরে এনে পড়তে হবে) -

"কোন দরুদ শরিফ ৭বার, ফাতিহা ৭বার, আয়াতুল কুরসি ৭বার, তিনকুল (ইখলাস, ফালাক্ব, নাস) প্রত্যেকটা ৭বার, শেষে আবার দরুদ শরিফ ৭বার"

পড়ার পর হাত উঠাবেন, এবং পানি দিয়ে গোসল করবেন।

প্রথমে এই পানি দিয়ে গোসল করলেন পরে অন্য পানি দিয়ে ভালোমতো করবেন, সমস্যা নাই। যার সমস্যা সে যদি পড়তে না পারে, তাহলে অন্যজন পানিতে হাত রেখে পড়ে দিবে, এরপর গোসল করবেন।

বদনজর থেকে বাঁচার জন্য কি করবো?

১। সর্বদা আল্লাহর জিকির করবে, উদাহরণ আগের পর্বে দেয়া হয়েছে।

২। হাদিসে বর্ণিত সকাল সন্ধ্যার দোয়াগুলো পড়বে, বিশেষতঃ "বিসমিল্লাহিল্লাযি...." এটা আর তিন ক্বুল তিনবার।

৩। মেয়ে হলে অবশ্যই পর্দার অভ্যাস করবে।

৪। আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে উচিত হলো, মাঝেমধ্যেই সুরা ফালাক নাস পড়ে বাচ্চাদেরকে ফুঁ দিবেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনটা করেছেন।

৫। এই দু'আ সকাল-সন্ধ্যায় কয়েকবার পড়ে বাচ্চাদের ফুঁ দিয়ে দিবেন, নিজের জন্যও পড়বেন -

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ

আল্লাহ আমাদেরকে সকলপ্রকার অনিষ্ঠ থেকে হিফাজত করুক.. আমিন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.