যা মেনে আমল করলে ফেতনা থেকে বাঁচা যাবে ইন শা'আল্লাহ
১) অধিক হারে চুপ থাকা
যে লোক যাবতীয় ফেতনা থেকে এতো পরিমাণ চুপ থাকে, যার কারণে কোন ফেতনা তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি ।
[ আল ফিতান ]
২) অধিক হারে দুআ করা
হযরত হুজাইফা রাঃ বলেছেন : মানুষের উপর এমন একটা যুগ আসবে ,যখন কেউ রক্ষা পাবে না, সে ছাড়া যে দোয়া করছে, ডুবন্ত মানুষের দোয়ার মত ।
[ মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা - ]
৩) ফেতনার দিকে দৃষ্টি বা উকি না দেওয়া
এবং ফেতনার দিকে না যাওয়া
রাসূল (ﷺ) বলেন :
যে ব্যক্তি ফিতনার দিকে তাকাবে ফিতনা তাকে ঘিরে ধরবে ।
তখন কেউ যদি কোন আশ্রয়ের জায়গা
কিংবা নিরাপদ জায়গা পায়,
তাহলে সে যেন আত্মরক্ষা করে ।
[ সহিহ বুখারী ]
৪) ফেতনার সময় নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া,
প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে না বের হওয়া !
রাসূল (ﷺ) বলেছেন:
অচিরেই এমন ফিতনার আত্মপ্রকাশ হবে,
যা বসে থাকা ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি হতে উত্তম থাকবে ।
আর দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি তখন চলমান ব্যক্তি হতে উত্তম থাকবে ।
আর চলমান ব্যক্তি তখন দ্রুতগামী ব্যক্তি হতে ভাল থাকবে ।
[ সহিহ মুসলিম ]
৫) ফেতনার সম সৎকাজ আকড়ে ধরা এবং
অসৎকাজ পরিহার করা এবং
আল্লাহ ভীরু মুত্তাকীদের সাথে চলাফেরা করা,
অন্য পাপাচারিদের সাথে সঙ্গ ত্যাগ করা
রাসূল ( ﷺ) বলেন ----- যখন ফিতনা তিব্র আকার ধারণ করবে তখন তোমরা সৎকাজকে মজবুত ভাবে আকড়ে ধরবে এবং অসৎকাজ হতে বিরত থাকবে ।
তোমাদের মাঝে বিশেষ লোক যারা রয়েছে
তাদের প্রতি মনোনিবেশ করবে এবং
সর্বধারণকে এরিয়ে চলবে।
[ আল ফিতান ]
৬) ফেতনার জামানায় জান্নাতি হওয়ার বিশেষ তিনটা উপায়
হযরত উকবা ইবনু আমির (রাঃ) বলেন :
একদা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, নাজাতের উপায় কি ?
তিনি বললেন, ‘নিজের জিহ্বা আয়ত্তে রাখ,
নিজের ঘরে পড়ে থাক এবং
নিজের পাপের জন্য রোদন কর’।
[ আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত ]
৭) সব চেয়ে বড় ফেতনা বর্তমান সময়ে
আর সেটা হচ্ছে নারী, তা থেকে নিজেক মুক্ত রাখা
রাসূল ( ﷺ) বলেন : কোন নারীর উপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি বারবার দৃষ্টিপাত করো না ।
বরং নজর অতিসত্তর ফিরিয়ে নিও, কারণ, তোমার জন্য প্রথমবার ক্ষমা, দ্বিতীয়বার নয় ।
[ আহমদঃ১৩৬৯ ]
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন---
পুরুষের জন্য নারীজাতি অপেহ্মা
অধিক ক্ষতিকর কোন ফিত্না আমি রেখে গেলাম না ।
[ সহিহ বুখারী ]
৮) এই উম্মতের একটি ফেতনা হচ্ছে
ধন-সম্পদ এর ফেতনা, যা আল্লাহ আল্লাহর আনুগত্য থেকে মানুষকে গাফেল রাখে, এটা পরিহার করা, যাতে আল্লাহ ইবাদত করা থেকে দূরে না রাখেন
হযরত কা’ব ইবনু ইয়ায (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি :
প্রত্যেক উম্মাতের জন্য কোন না কোন ফিত্না রয়েছে ।আর আমার উম্মাতের ফিত্না হলো ধন-সম্পদ ।
[ জামে' আত-তিরমিজি ]
৯) ফেতনার জামানায় গুরুত্বপূর্ণ একটা আমল
সেটা হচ্ছে কুরআন-সুন্নাহ আকড়ে ধরা,
যা মানুষের মধ্যে না থাকলে ফেতনা গ্রাস করে ফেলবে
রাসূল ( ﷺ) বলেন,
নিশ্চয় আমি তোমাদের মাঝে এমন বস্তু রেখে যাচ্ছি- তোমরা যদি উহা আঁকড়ে ধরে থাক
তবে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না ।
আর তা হল আল্লাহর কিতাব কুরআন ও তাঁর নবীর সুন্নাত।”
[ সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব]
১০) ফেতনার জামানায় ফেতনা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা
ফিতনা গরুর ন্যায় ।তাতে বহু মানুষ ধ্বংস হবে ।
তবে যারা পূর্বেই এ সম্পর্কে অবগতি লাভ করবে তারা ধ্বংস হবে না ।
[ আল ফিতান : ৫ ]
বর্তমান সময়ে এই গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো
মানুষকে জানানো বিশেষ প্রয়োজন...
রাসূল (ﷺ) বলেছেন,“
যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে
তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে,
যে পরিমাণ পাবে তার অনুসরণকারীরা ।”
[ সহীহ মুসলিম : ২৬৭৪,৬৮০৪ ]
আল্লাহ্পাক আমাদের হেফাযত করুন।