🔸একজন সাহাবীর রাতে ঠিকমতো ঘুম হতো না!
তিনি ঘুমানোর অনেক চেষ্টা করতেন, অনেক দুআ পড়তেন। তবুও তাঁর ঘুম আসতো না। তাঁর নাম ছিলো যায়িদ ইবনে সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু; বিখ্যাত ওহী লেখক সাহাবী। তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ –এর কাছে গিয়ে তাঁর অনিদ্রার কথা জানান।
রাসূলুল্লাহ ﷺ যায়িদ ইবনে সাবিতকে একটি দুআ শিখিয়ে দিলেন।
দুআটি হলো- “আল্লাহুম্মা গারাতিন নুজুমু, ওয়া হাদাআতিল উয়ুনু, ওয়া আনতা হাইয়ুন কাইয়ুমুন, লা তা'খুযু কা ছিনাতুন ওয়ালা নাওম। ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুমু, আহদি' লাইলি ওয়া আনিম আইনি।” (তাবরানী: ৪৮১৭)
যার অর্থ হলো- “হে আল্লাহ! আকাশের তারাগুলো নিভে যাচ্ছে, কিন্তু আমার চোখ এখনো জাগ্রত। আর আপনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, ঘুম বা তন্দ্রা আপনাকে পরাভূত করতে পারে না। হে চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, আমার রাতকে প্রশান্তিময় করুন এবং আমার চোখে ঘুম এনে দিন।”
কী সুন্দর দুআ!
এই দুআর আমল করার পর যায়িদ ইবনে সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহুর অনিদ্রা সমস্যা কেটে যায়।
আরেকবার বিখ্যাত সাহাবী খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুও রাসূলুল্লাহ ﷺ –এর কাছে যান একই সমস্যা নিয়ে। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকেও একটি দুআ শিখিয়ে দেন। (জামে আত-তিরমিজি: ৩৫২৩)
🔹 গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৩০% মানুষের ঘুমে সমস্যা হয়, ঠিকমতো ঘুম হয় না!
ঘুম হলো আল্লাহর দেয়া একটি নেয়ামত, এটা রিজিক। আমরা রিজিক বলতে শুধুমাত্র খাবারকেই মনে করি। আসলে তা না। খাবার, টাকা-পয়সা হলো রিজিকের অনেকগুলো ভাগের মধ্যে একটি ভাগ। এর বাইরেও অনেক রিজিক আছে যেগুলোকে আমরা ‘রিজিক’ মনে করি না!
আপনার টাকা, বাড়ি, গাড়ি, খাবার সবই আছে। কিন্তু, ঠিকমতো ঘুম হয় না। ঘুমের ওষুধ খেতে হয় বা ঘুমের ওষুধ খেয়েও ঘুম আসে না। তাহলে আপনিই জানেন এই সমস্যা কতো জটিল, কতো কষ্টের। অনিদ্রা মানুষের সুখ কেড়ে নেয়, মানুষের মেজাজ নষ্ট করে।
🔺 অনিদ্রার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো জিন-যাদু সংক্রান্ত সমস্যা। জিনের আছর বা যাদুর লক্ষণের মধ্যে অন্যতম একটি লক্ষণ হলো রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়া, একেবারে শেষ রাতে ঘুম আসা, ঘুমালেই দুঃস্বপ্ন দেখা।
এজন্য ঘুমের আগে অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়। চোখে ঘুম আসলো আর ঘুমিয়ে গেলেন এমনটা মুমিনের কাজ না।
◽ ঘুমের আগে ৫-৭টি ছোটো ছোটো আমল আছে। যেগুলো করতে মাত্র ১০ মিনিট লাগে।
বেশিরভাগ মানুষ এই ব্যাপারে সচেতন না। যার ফলে ঘুম না আসলে ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, একসময় ওষুধও কাজে আসে না!
◻️ ঘুমের আগে যা যা করতে পারে:
১. ওজু করে ঘুমালে ফেরেশতা আপনার হেফাজতের জন্য দুআ করবে। (সহীহ বুখারী: ২৪৭)
২. বিছানা ঝাড়ু দিতে হবে এবং ঘুমের পূর্বে 'আল্লাহুম্মা বিসমিকা...' দুআটি পড়তে হবে। ডানপাশ হয়ে ঘুমাতে হবে। এটা সুন্নাত। (সহীহ বুখারী: ৬৩২০, ৬৩২৪)
৩. আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমালে সকাল পর্যন্ত জিন, শয়তান আপনার কাছে আসতে পারবে না। (সহীহ বুখারী: ২৩১১)
৪. সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত 'আমানার রাসুলূহ...' পড়লে এটা আপনার জন্য যথেষ্ট। (সহীহ বুখারী: ৫০০৯)
৫. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নিতে হবে। (সহীহ বুখারী: ৫০১৭)